02,2021 Tuesday at 19:35:07 | Share |
৭ মাসে ৪৭ কোটি মাইল যাত্রা শেষে মঙ্গলে পা রাখলো নাসার 'পারসিভিয়ারেন্স'

ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করলো মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। মঙ্গলগ্রহে সফল অবতরণ করছে নাসার মহাকাশযান পারসিভিয়ারেন্স রোভার। কোনো ধরনের জটিলতা ছাড়াই বাংলাদেশ সময় রাত ২.৫৫ মিনিটে মঙ্গলগ্রহণের পৃষ্ঠে অবতরণ করে রোভারটি। ছয় চাকার এই স্বয়ংক্রিয় যানটি পৃথিবী থেকে ৪৭ কোটি মাইল পথের যাত্রা শুরু করেছিল সাত মাস আগে। দীর্ঘ যাত্রার পর মঙ্গল গ্রহে অবতরণ করে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার স্বপ্নের মঙ্গলযান পারসিভিয়ারেন্স।
রোভারটির সফল অবতরণের পরপরই উল্লাসে ফেটে পড়েন ক্যালিফোর্নিয়ার পাসাডিনার গবেষণা কেন্দ্রের প্রকৌশলীরা। ছয় চাকার মহাকাশযানটিতে রয়েছে একটি ল্যান্ডার ভিশন সিস্টেম, রয়েছে টেরেন রিলেটিভ নেভিগেশন, রিয়েল টাইম ছবি তুলে রাখার স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র। ল্যান্ডার থেকে মঙ্গলের আকাশে ওড়ানো হবে হেলিকপ্টার ড্রোন, ‘ইনজেনুইটি’এটি আকাশ থেকে মঙ্গলের আরও বড় এলাকাজুড়ে নজরদারি চালাবে। এই প্রথম অন্য কোনও গ্রহে হেলিকপ্টার ওড়াতে চলেছে সভ্যতা।
মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখবে এটি। এছাড়া, মঙ্গলের মাটিতে কি কি উপাদান রয়েছে, তা নিয়ে গবেষণা চালাবে পারসিভিয়ারেন্স রোভার। এজন্য মহাকাশযানটিতে রয়েছে বিশেষ যন্ত্র, যার নাম মক্সিই। এই যন্ত্রের সাহায্যে মঙ্গলের বায়ু মন্ডলে অক্সিজেন তৈরি করা যাবে বলে জানান নাসার বিজ্ঞানিরা।
মঙ্গলগ্রহে নভোযান অবতরণের এখন পর্যন্ত ১৪ বার চেষ্টা চালানো হয়েছে। যার মধ্যে সফল হয়েছে আটটি আর এর সবগুলোই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের।
যানটিকে নিরাপদে লাল গ্রহটির পৃষ্ঠে অবতরণ করতে হয়। এর আগে বহু মহাকাশযান এই কাজ করতে গিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে গেছে।
কিন্তু পারসিভেয়ারেন্স যদি সফল হয়, তাহলে মঙ্গলগ্রহে অতীতে কোন প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা তা জানার অভূতপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এর আগে এত উন্নত যন্ত্রপাতি নিয়ে কোন গ্রহে বৈজ্ঞানিক মিশন পাঠানো হয়নি এবং এত সম্ভাবনাময় একটা স্থানকে টার্গেট করে কোন রোবটও এর আগে কখনও নামানো হয়নি।
যেখানে এই মহাকাশ রোবটের মঙ্গলপৃষ্ঠ স্পর্শ করেছে সেই স্থানটি হল জেযেরো ক্রেটার। একসময় এই গহ্বরের স্থানটিতে বিশাল একটি হ্রদ থাকার লক্ষণ উপগ্রহে পাওয়া ছবি থেকে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন। তাদের ধারণা এই হ্রদটিতে প্রচুর পানি ছিল এবং সম্ভবত সেখানে জীবনও ছিল।
জেযেরো গহ্বরের ধুলাবালুর মধ্যে থেকে নমুনা সংগ্রহ করবে রোবট যানটি, যা বিশ্লেষণ করে দেখা হবে গ্রহটিতে অতীতে জৈব কোন কর্মকাণ্ডের হদিস ছিল কিনা। সবচেয়ে লক্ষণযুক্ত ও সম্ভাবনাময় নমুনা পৃথিবীতে পাঠানো হবে ভবিষ্যত মিশনের প্রস্তুতির জন্য।
"মহাকাশ মিশনে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জগুলোর অন্যতম ছিল সফল অবতরণ। মঙ্গলগ্রহে এর আগে যেসব মিশন পাঠানো হয়েছে তার মধ্যে ৫০ শতাংশ যান মঙ্গলের পিঠে সফলভাবে অবতরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। কাজেই আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল জেযেরো গহ্বরে রোবট যানটি নিরাপদে নামানো এবং সেটা সফল হয়েছে" এমনটি বলেছেন প্রকৌশলীরা।
User Comments



- আন্তর্জাতিক